Company News 24
Stay Ahead with the Latest in Business

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম(ওয়েবসাইট)

যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে

0

বাংলাদেশে অনলাইন কেনাকাটার ওপর নির্ভরতা অনেকটাই বেড়েছে। বাসায় কেউ নেই? কিছু খেতে ইচ্ছে ? অনলাইনে ফুড পান্ডা বা কোন প্রতিষ্ঠানকে অর্ডার করলেন, ব্যস খাবার বাসায় পৌঁছে যাবে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী চাকরিজীবী কিংবা ব্যস্ত মানুষদের কাছে এটি অনলাইন কেনাকাটা খুবই জনপ্রিয়। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম ? কী দেবেন ভাবছেন?

অনলাইন বিজনেস এর  অনেক সুন্দর সুন্দর স্মার্ট নাম হয় তবে মনে রাখারমত নাম রাখা চাই। সাথে সে নামে যেন ওয়েবসাইটও করা যায় সেটাও মাথায় রাখবেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বছর গুলোতে আমাদেরকে কেনাকাটার চাহিদা বা অভিজ্ঞতাকে আরো সহজ করে তোলার জন্য বর্তমানে বাজারে বা অনলাইনে বেশকিছু ই-কমার্স সাইট দেখা যায়।

এগুলোর নাম নির্ভর করছে তাদের কাজের ধরনের ওপর। তারা কী সেবা দিচ্ছে? আপনি কী ধরনের পণ্য বা প্রডাক্ট বিক্রি করবেন বা সেবা বিক্র করতে তার ওপর নির্ভর করবে আপনার ইকমার্স সাইট এর নাম।

তাই আপনার প্রডাক্ট বিক্রি করে এমন প্রতিষ্ঠান কি কি আছে তা যাচাই করুন। ভাল আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
কিংবা গুগলে সার্চ করুন অনেক নাম জেনারেটর রয়েছে, সহযোগিতা পাবেন।

বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কিছু জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হলো:

বাংলাদেশে জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান:
1. Daraz Bangladesh (দারাজ বাংলাদেশ)
2. Chaldal (চালডাল)
3. Evaly (ইভ্যালি) (এটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে)
4. Ajkerdeal (আজকের ডিল)
5. Rokomari (রকমারি)
6. Pickaboo (পিকাবু)
7. PriyoShop (প্রিয়শপ)
8. Bagdoom (বাগডুম)
9. Othoba (অথবা)
10. Bikroy (বিক্রয়) (বিক্রয় ও ক্রয় প্ল্যাটফর্ম)

আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান:
1. Amazon (আমাজন)
2. eBay (ইবে)
3. Alibaba (আলিবাবা)
4. Flipkart (ফ্লিপকার্ট) (ভারত)
5. Walmart (ওয়ালমার্ট)
6. Etsy (এটসি)
7. Rakuten (জাপান)
8. Shopify (শপিফাই)
9. JD.com (জেডি.কম) (চীন)
10. Target (টার্গেট)

এই প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে লেনদেন পরিচালনা করে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম নির্বাচনে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে

ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার আগে সঠিক নাম নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নামই হলো আপনার ব্র্যান্ডের প্রথম পরিচয়। নাম নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে, যাতে তা ক্রেতাদের জন্য আকর্ষণীয়, সহজে মনে রাখার মতো, এবং ব্যবসার প্রকৃতি ও লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে। এছাড়া, ওয়েবসাইটের ঠিকানাও (ডোমেইন) এমন হতে হবে যাতে গ্রাহকরা সহজে আপনার সাইটে প্রবেশ করতে পারে। নিচে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম নির্বাচনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হলো:

১. ব্যবসার প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য:

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম অবশ্যই ব্যবসার ধরন ও পণ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। নাম শুনেই গ্রাহককে বুঝতে হবে আপনি কী ধরনের পণ্য বা সেবা দিচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, “Chaldal” নামে প্রতিষ্ঠানটি খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ইঙ্গিত দেয়। আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম যদি পণ্যের ধরন বা সেবার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, তাহলে তা গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করতে পারে।

২. সহজ ও সংক্ষিপ্ত নাম:

নাম অবশ্যই সহজ ও সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত, যাতে গ্রাহকরা তা সহজে উচ্চারণ করতে পারে এবং মনে রাখতে পারে। অতিরিক্ত জটিল বা দীর্ঘ নাম গ্রাহকদের কাছে কম আকর্ষণীয় হতে পারে এবং মনে রাখা কঠিন হয়। উদাহরণস্বরূপ, চাল ডাল, “Amazon”, “Daraz”, বা “Flipkart” নামগুলো সহজ, সংক্ষিপ্ত এবং মনে রাখার মতো।

৩. ডোমেইন নামের সহজলভ্যতা:

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম নির্বাচনের সময় ডোমেইন নামের সহজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডোমেইন নামটি অবশ্যই আপনার ব্যবসার নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, যেন গ্রাহকরা সহজেই আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পায়। উদাহরণস্বরূপ, “rokomari.com” ওয়েবসাইটের নাম সরাসরি প্রতিষ্ঠানটির নামের সাথে মিলে যায়। ডোমেইন নাম সহজলভ্য না হলে, সংশ্লিষ্ট ডোমেইন খুঁজতে বা পরিবর্তন আনতে হতে পারে।

৪. নামের অনন্যতা:

নির্বাচিত নামটি অবশ্যই অনন্য হতে হবে, যা প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা হবে এবং গ্রাহকের মনে বিশেষভাবে স্থান করে নেবে। নাম যদি ইতোমধ্যে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের হয়, তাহলে কপিরাইট বা ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত আইনি সমস্যায় পড়তে পারেন। সেজন্য নামের ট্রেডমার্ক নিশ্চিত করার আগে ভালোভাবে যাচাই করা উচিত।

৫.ভবিষ্যতের প্রসারযোগ্যতা:

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম নির্বাচন করার সময় ভবিষ্যতের প্রসারযোগ্যতার কথা বিবেচনা করা উচিত। যদি আপনার পরিকল্পনা থাকে পণ্য বা সেবার পরিধি বাড়ানোর, তবে এমন নাম বেছে নিন যা ভবিষ্যতে অন্য পণ্য বা সেবার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, “Amazon” নামটি শুধুমাত্র বইয়ের জন্য নয়, বরং যে কোনো ধরনের পণ্য বিক্রির জন্যও উপযুক্ত।

৬.আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা:

আপনি যদি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা প্রসারিত করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে এমন নাম নির্বাচন করতে হবে যা বিভিন্ন ভাষায় সহজে উচ্চারণযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য। কিছু নাম একটি নির্দিষ্ট ভাষায় ভালো শোনালেও, অন্য ভাষায় তা অস্বস্তিকর বা আপত্তিকর হতে পারে। তাই, নামটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কিনা তা যাচাই করা উচিত।

৭. SEO ও ডিজিটাল মার্কেটিং:

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম SEO (Search Engine Optimization)-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নামটি এমন হতে হবে যাতে গ্রাহকরা সহজেই সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পায়। তাই, নামের মধ্যে এমন কিওয়ার্ড বা প্রাসঙ্গিক শব্দ ব্যবহার করতে পারেন যা সার্চ ইঞ্জিনে ভালো পারফরমেন্স করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার ব্যবসা যদি ইলেকট্রনিক পণ্যের হয়, তাহলে “electronics” বা “tech” সংক্রান্ত শব্দ যোগ করা যেতে পারে।

৮. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহজলভ্যতা:

আজকের ই-কমার্স ব্যবসার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থিতি অপরিহার্য। তাই, নাম নির্বাচন করার সময় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও সেই নাম সহজলভ্য কিনা তা যাচাই করা উচিত। ব্যবসার নাম এবং তার সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল যদি একসঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে, তাহলে এটি ব্র্যান্ডের সমন্বয় এবং পরিচিতি তৈরিতে সহায়ক হবে।

৯.আবেগ ও সংবেদনশীলতা:

নামটি আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল হওয়া উচিত, যা গ্রাহকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। একটি ভালো নাম ব্যবসার প্রতি গ্রাহকদের আস্থা এবং অনুভূতির সাথে সংযোগ তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, “PriyoShop” নামটি গ্রাহকদের প্রিয় একটি শপিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ধারণা তৈরি করে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসার সফলতা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। নাম অবশ্যই ব্যবসার ধরন, লক্ষ্য এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। সহজ, স্মরণীয় এবং প্রাসঙ্গিক নাম ব্যবসার ব্র্যান্ড পরিচিতি ও ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণে সহায়ক হবে।মনে রাখবেন, একবছর পর নাম পরিবর্তন করতে চাইলে একবছর পিছিয়ে পড়বেন ব্যবসার জগত হতে। ধীরে সুস্থে সিদ্ধান্ত নিন।

ডিবিআইডি নিবন্ধন ছাড়া ই-কমার্স ব্যবসা করা বৈধ নয়

 

ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম, ডিজিটাল কমার্স নিবন্ধন, অনলাইন বিজনেস লাইসেন্স, ই কমার্স রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সব তথ্য পাবেন ডিবিআইডি(DBID)তে। 

 

ডিবিআইডি(DBID) কী ? 

ডিবিআইডি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যার লক্ষ্য বাংলাদেশের বিক্ষিপ্ত ব্যবসাগুলোকে একত্রিত করা। প্ল্যাটফর্মটি ব্যবসার জন্য অনন্য শনাক্তকারী ইস্যু করবে যা সরকারকে বাংলাদেশের ব্যবসার কার্যক্রম সনাক্ত, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে দেবে।ই-কমার্স খাতে ব্যবসা করতে গেলে ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ডিবিআইডি) নিতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে এই নিবন্ধন নিতে হবে।

ডিবিআইডি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যার লক্ষ্য বাংলাদেশের বিক্ষিপ্ত ব্যবসাগুলোকে একত্রিত করা। এটি বিভিন্ন সংগঠন, দেশী ও বিদেশী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র-বণিক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বাকিদের ডিজিটালভাবে তাদের নিজ নিজ ব্যবসার জন্য নিবন্ধন এবং একটি অনন্য ব্যবসায়িক সনাক্তকরণ নম্বর পেতে সাহায্য করবে।

 

ডিবিআইডি ব্যবসায়িক প্রারম্ভিক প্রক্রিয়াকে সুসংগঠিত করতে চায় এবং সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে, একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করবে। এর লক্ষ্য হল বাংলাদেশের ব্যবসার তাৎক্ষণিক নিবন্ধন, বৈধতা এবং যাচাইকরণ সম্পূর্ণ করা।

ডিজিটাল বিজনেস আইডি (ডিবিআইডি) সহ সোশ্যাল মিডিয়া-ভিত্তিক এবং ওয়েবসাইট-ভিত্তিক ই-কমার্স ব্যবসা উভয়ই প্রকারের ব্যবসাকে  সরকারি স্বীকৃতি প্রদান ও আইনের আওতায় আনতে এই অ্যাপ চালু করেছে।

উপরের লিঙ্ক এ ক্লিক করে আদেনের নিয়মাবলী, আবেদন পত্র সব পাওয়া যাবে।

 

ই কমার্স ট্রেড লাইসেন্স, ই কমার্স ট্রেড লাইসেন্স ফি

আপনার সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন অফিস হতে আপনি ট্রেড লাইসেন্স নিতে পারেন। আবেদন করলেই পেয়ে যাবেন। আগে নাম ঠিক করুন, প্রডাক্ট টিক করুন তারপর ট্রেডলাইসেন্স।

অনলাইনে ট্রেডলাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন

 

ই-কমার্স এসোসিয়েশন

বাংলাদেশে ই-ক্যাব এবং উই নামে দুটি ই কমার্স এসোসিয়েশন রয়েছে। কয়েক হাজার সদস্য রয়েছে তাদের। এখানে সদস্য হলে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা অফার করা হয়। এর বাইরেও হাজার হাজার নিবন্ধহীন ছোট ছোট ই-কমার্স রয়েছে। যারা সুন্দরভাবে ব্যবসা করছে।

তবে সেখানে সদস্য হতে রয়েছে কিছু ঝক্কি ঝামেলা। লম্বা তালিকার দলিল পত্রাদি তৈরি করে জমা দিতে হবে। আবার দুজন সদস্যের রেফারেন্সও লাগবে।

ই কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা কে ?

 

ই-কমার্সের (E-commerce) প্রতিষ্ঠাতা বলতে সরাসরি কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা কঠিন, কারণ ই-কমার্সের ধারণা অনেক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ফল এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। তবে ই-কমার্সের ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কথা বলা যায় যারা ই-কমার্সের প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।

 ১. মাইকেল অ্যাল্ড্রিচ (Michael Aldrich):
মাইকেল অ্যাল্ড্রিচকে ই-কমার্সের অন্যতম প্রাথমিক উদ্ভাবক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ১৯৭৯ সালে একটি টেলিভিশন এবং একটি ফোন লাইনের মাধ্যমে “টেলিশপিং” (Teleshopping) সিস্টেম উদ্ভাবন করেন, যা আজকের ই-কমার্সের পূর্বসূরি। এটি ছিল প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবস্থা যেখানে টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে পণ্য কেনা যেত।

 ২. জেফ বেজোস (Jeff Bezos):
ই-কমার্সের প্রসারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম হলেন **জেফ বেজোস**, যিনি ১৯৯৪ সালে **Amazon** প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে আমাজন একটি অনলাইন বই বিক্রির প্রতিষ্ঠান ছিল, কিন্তু এখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে।

 ৩. পিয়েরে ওমিডিয়ার (Pierre Omidyar):
পিয়েরে ওমিডিয়ার ১৯৯৫ সালে **eBay** প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল প্রথম সফল অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতারা নিলাম পদ্ধতিতে পণ্য কেনা-বেচা করতে পারত। ই-বের ধারণা ই-কমার্সের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

 ৪. জ্যাক মা (Jack Ma):
চীনের অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান **Alibaba Group**-এর প্রতিষ্ঠাতা **জ্যাক মা**। ১৯৯৯ সালে আলিবাবা প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এটি চীনের অন্যতম বৃহত্তম এবং প্রভাবশালী ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। আলিবাবা চীনে ছোট ও মাঝারি ব্যবসার জন্য B2B, B2C, এবং C2C মডেলগুলো জনপ্রিয় করেছে।

 ৫. মার্ক লর (Marc Lore):
**Jet.com** এবং **Diapers.com**-এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক লর ই-কমার্সের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। Jet.com ছিল একটি অনলাইন রিটেইল প্ল্যাটফর্ম, যা পরে **Walmart** দ্বারা অধিগ্রহণ করা হয়। তিনি ই-কমার্স খাতে উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক মডেল চালু করেন।

আরও পড়ুন : ই কমার্স ব্যবসা বাণিজ্যকে সহজ করেছে ব্যাখ্যা কর(২০২৪)

ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা বলতে সরাসরি একজনকে উল্লেখ করা সম্ভব নয়, তবে মাইকেল অ্যাল্ড্রিচের প্রাথমিক অবদান থেকে শুরু করে জেফ বেজোস, পিয়েরে ওমিডিয়ার, জ্যাক মা প্রমুখ উদ্যোক্তারা ই-কমার্সকে বর্তমান অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। এই সমস্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।

 

আমি অনলাইনে ব্যবসা করতে চাই ? কীভাবে পরিকল্পনা সাজাতে পারি

 

অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফল অনলাইন ব্যবসার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে, যা আপনার ব্যবসার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। নিচে অনলাইনে ব্যবসা শুরুর জন্য একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা সাজানো হলো:

১. ব্যবসার ধারণা নির্ধারণ
আপনার প্রথম কাজ হলো কী ধরনের পণ্য বা সেবা অনলাইনে বিক্রি করতে চান তা নির্ধারণ করা। এজন্য নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে পারেন:

– পণ্যের চাহিদা: বাজারে কোন ধরনের পণ্যের চাহিদা বেশি? আপনি এমন পণ্য বেছে নিন যা ক্রেতাদের সমস্যা সমাধান করে।
– নিজের দক্ষতা: আপনি কোন বিষয়ে ভালো বা আগ্রহী? আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ব্যবসার ধারণা বের করুন।
– বাজার বিশ্লেষণ: বাজারে প্রতিযোগিতা এবং ক্রেতার চাহিদা পর্যালোচনা করুন। কোন পণ্যে প্রতিযোগিতা কম, সে বিষয়ে নজর দিন।

 ২. লক্ষ্যবস্তু (Target Audience) নির্ধারণ
আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকরা কারা তা নির্ধারণ করা জরুরি। লক্ষ্যবস্তু শ্রেণী সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হলে, আপনি সেই অনুযায়ী আপনার মার্কেটিং এবং পণ্য পরিকল্পনা করতে পারবেন। এজন্য কিছু প্রশ্নের উত্তর বের করুন:

– তাদের বয়স কত?
– তারা কোথায় থাকে?
– তাদের ক্রয়ের ক্ষমতা এবং অভ্যাস কেমন?
– তাদের কোন সমস্যার সমাধান করছেন আপনার পণ্য?

৩. ব্যবসার মডেল নির্বাচন
অনলাইনে ব্যবসার বিভিন্ন মডেল রয়েছে। আপনি কোন মডেলটি অনুসরণ করবেন তা ঠিক করুন:

– B2C (Business to Consumer): সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রি।
– B2B (Business to Business): অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা।
-Dropshipping: সরাসরি মজুদ না রেখে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করা।
– Affiliate Marketing: অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য প্রচার করে কমিশন অর্জন করা।

৪. ব্যবসার নাম ও ডোমেইন নির্বাচন

আপনার ব্যবসার জন্য একটি আকর্ষণীয় নাম নির্ধারণ করুন, যা সহজে মনে রাখা যায় এবং পণ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ডোমেইন নামটি (যেমন: www.yourbusiness.com) সহজ এবং ব্যবহার উপযোগী হতে হবে। ডোমেইন নামের জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম যেমন GoDaddy বা Namecheap ব্যবহার করতে পারেন।

৫. ওয়েবসাইট তৈরি করা

অনলাইন ব্যবসার জন্য একটি পেশাদার ওয়েবসাইট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে পারেন:

– প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন: আপনি সহজে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাইলে Shopify, Wix, WooCommerce বা WordPress ব্যবহার করতে পারেন।
– নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে: পেমেন্ট প্রসেসিংয়ের জন্য PayPal, Stripe বা স্থানীয় পেমেন্ট গেটওয়ে সংযুক্ত করুন।
– উপযুক্ত ডিজাইন: ওয়েবসাইটটি যেন মোবাইল এবং ডেস্কটপ উভয়েই ভালোভাবে দেখা যায়, এ বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

 ৬. পণ্য তালিকা ও মূল্য নির্ধারণ
আপনার পণ্যের তালিকা তৈরি করুন এবং সঠিক মূল্য নির্ধারণ করুন। মূল্য নির্ধারণে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:

– উৎপাদন বা সংগ্রহ খরচ
– বাজার মূল্য এবং প্রতিযোগীদের মূল্য
– আপনার লক্ষ্যমাত্রা গ্রাহকদের ক্রয় ক্ষমতা

৭. সাপ্লাই চেইন এবং লজিস্টিকস ব্যবস্থা

আপনার পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর জন্য কার্যকরী সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করুন। নিজস্ব সরবরাহ ব্যবস্থার পাশাপাশি থার্ড-পার্টি লজিস্টিকস কোম্পানির সেবা নিতে পারেন। যেমন: **ডেলিভারি টাইগার**, **পেপারফ্লাই**, **রেডেক্স** ইত্যাদি।

 ৮. মার্কেটিং পরিকল্পনা
একটি সফল অনলাইন ব্যবসার জন্য সঠিক মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পণ্য বা সেবা প্রচার করার জন্য নিচের উপায়গুলো বিবেচনা করতে পারেন:

– সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন দিন।

– ইমেইল মার্কেটিং: আপনার গ্রাহকদের ইমেইল লিস্ট তৈরি করুন এবং তাদের নিয়মিত আপডেট ও অফার পাঠান।

– SEO (Search Engine Optimization): সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইট যাতে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়, সে জন্য SEO অপটিমাইজ করুন।

– Influencer Marketing: জনপ্রিয় ব্যক্তি বা ব্লগারদের মাধ্যমে আপনার পণ্য প্রচার করুন।

 ৯. আইনি ও কর বিষয়ক বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলুন

ব্যবসা করার আগে দেশের আইন ও নিয়ম মেনে চলা অপরিহার্য। আপনার ব্যবসাকে আইনি প্রতিষ্ঠানের আওতায় নিয়ে আসার জন্য নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করুন:

– ট্রেড লাইসেন্স
– ব্যবসার নিবন্ধন (যদি প্রয়োজন হয়)
– কর ও ভ্যাট বিষয়ক নীতি মেনে চলা

১০. গ্রাহক সেবা এবং রিভিউ ব্যবস্থা

গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে একটি দক্ষ গ্রাহক সেবা দল তৈরি করুন। পণ্য সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান এবং বিক্রয় পরবর্তী সেবা প্রদান নিশ্চিত করুন। এছাড়া, গ্রাহকদের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করুন, যা ভবিষ্যতে নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করবে।

১১. অ্যানালিটিক্স ও ডেটা বিশ্লেষণ

আপনার ব্যবসার কার্যক্রম এবং বিক্রয় পরিসংখ্যান নিয়মিত বিশ্লেষণ করুন। Google Analytics এবং অন্যান্য অ্যানালিটিক্স টুল ব্যবহার করে গ্রাহকদের ক্রয় প্রবণতা, সাইট ভিজিট এবং পণ্যের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করুন। এই তথ্য আপনাকে ব্যবসার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।

অনলাইনে ব্যবসা শুরু করা একটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন হওয়া প্রক্রিয়া। প্রথমে একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করলে ব্যবসা সহজ হবে। সফল হতে হলে ক্রমাগত পণ্যের গুণগত মান, গ্রাহক সেবা, এবং বাজার বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দিতে হবে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন।

-মেহেরাব আফজাল

Leave A Reply

Your email address will not be published.

google-site-verification=1ANNK1RMHaj1Iw7yR8eRAr3R5K-aLbxTqN87o-pnte8 google-site-verification: google05340dd170c353ef.html