EMail: corporatenews100@gmail.com
ঢাকা, ১ জানুয়ারি, ২০২৫: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি গণঅভ্যুত্থানে আহত দুই যোদ্ধা, নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমুর হাতে হেলথকার্ড তুলে দেন।
আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবার উদ্যোগ
গত বছরের ১৯ জুলাই নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে ইফাত হোসেন তাঁর দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। অন্যদিকে, ১৫ জুলাই ঢাকার শাহবাগ এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হন ইসরাত জাহান ইমু, যিনি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন।
প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের খোঁজখবর নেন।
হেলথকার্ড বিতরণের পরিকল্পনা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট জেলায় হেলথকার্ড বিতরণ করা হবে। এই হেলথকার্ড কার্ডধারীদের জন্য সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে।
চিকিৎসা কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ইনস্টিটিউটে ১,০৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩৯ জনের দুটি চোখ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে গেছে এবং ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৫০টি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে তিনশর বেশি রেটিনা সার্জারি। ইনস্টিটিউটের চিকিৎসা কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবুল কেনান জানান, এখন পর্যন্ত ২১ জন রোগীর হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য
হেলথকার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই হেলথকার্ড সার্বক্ষণিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। কার্ডধারীরা যেকোনো সময় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক এবং সামাজিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জীবন যেন আনন্দময় ও প্রতিষ্ঠিত হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান, এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।(বাসস)
করপোরেটনিউজ২৪, জুবায়ের,মনির