EMail: corporatenews100@gmail.com
পাঠাওয়ের ফিনটেক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল উত্তোলন
পাঠাও, বাংলাদেশের একটি প্রিমিয়াম কনজিউমার টেকনোলজি কোম্পানি, সম্প্রতি ১২ মিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল উত্তোলন করেছে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাঠাওয়ের মোট ফান্ড রেইজ ৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি হয়েছে, যা বাংলাদেশি প্রি-সিরিজ বি স্টার্টআপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এই রাউন্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান ভেঞ্চারসুক।
এছাড়া অ্যাঙ্কারলেস বাংলাদেশ, ওসাইরিস গ্রুপ, সাউথ এশিয়া টেক, এবং ওপেনস্পেস ভেঞ্চারস সহ আরও কয়েকটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে।
এই নতুন তহবিল পাঠাওকে তার ফিনটেক সেবা সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন করার সুযোগ প্রদান করবে। ফাহিম আহমেদ, পাঠাওয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, জানিয়েছেন, “পাঠাও শুধু একটি ব্র্যান্ড নয়, এটি একটি লাইফস্টাইল। ফিনটেক খাতে আমাদের উদ্যোগ দেশের আর্থিক খাতকে নতুনভাবে গড়ে তুলবে।”
পাঠাওয়ের বর্তমান অবস্থান ও সেবার পরিধি
পাঠাও বর্তমানে রাইড-শেয়ারিং, লজিস্টিকস, এবং ফুড ডেলিভারি খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। ফিনটেক সেবা সংক্রান্ত তাদের আগ্রহ এবং উন্নতি এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। পাঠাও ইতোমধ্যেই Pathao Pay নামে একটি ডেবিট ওয়ালেট সেবা এবং দেশের প্রথম ‘Buy Now Pay Later’ সেবা Pathao Pay Later চালু করেছে।
Pathao Pay Later সেবা পাঠাওয়ের মেশিন লার্নিং পদ্ধতির কারণে ইতোমধ্যেই লাভজনক হয়েছে। নতুন তহবিল এই ফিনটেক সেবাগুলোর পরিসর বাড়াতে, প্রযুক্তি উন্নয়নে এবং বাজার বিস্তারে সহায়ক হবে।
ফিনটেক সেবায় পাঠাওয়ের পরিকল্পনা
ফাহিম আহমেদ আরও বলেন, “আমাদের মূল গ্রাহক বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম। প্রচলিত ব্যাংকগুলো তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা তরুণ পেশাজীবী ও প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য একটি বিশেষ আর্থিক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাই।”
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাঠাও তরুণ প্রজন্মের জন্য আধুনিক এবং সহজলভ্য আর্থিক সেবার প্রস্তাব নিয়ে আসবে। এতে করে তাদের আর্থিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি, তাদের জীবনযাত্রা আরও উন্নত হবে।
বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া
ভেঞ্চারসুক এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা তামের কাদুমি বলেন, “পাঠাও বাংলাদেশের ফিনটেক খাতের সবচেয়ে শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।” তাদের এই মন্তব্য প্রমাণ করে যে পাঠাওয়ের ফিনটেক সেবার প্রতি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ও আগ্রহ রয়েছে।
পাঠাওয়ের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে, পাঠাও ১ কোটিরও বেশি গ্রাহককে সেবা দিয়েছে এবং দেশের গিগ অর্থনীতি ও ছোট ব্যবসায় ৫ লক্ষেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এই নতুন তহবিল উত্তোলনের মাধ্যমে পাঠাও তার কার্যক্রম বিস্তৃত করতে এবং নতুন প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য আরও বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
পাঠাওয়ের নতুন বিনিয়োগ তাকে আরও শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, যা দেশের ফিনটেক খাতে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। এর মাধ্যমে পাঠাও দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি সৃজনশীল এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক আর্থিক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম হবে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।
পাঠাওয়ের ১২ মিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল উত্তোলন বাংলাদেশের ফিনটেক খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি পাঠাওকে তার সেবা সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা করবে, পাশাপাশি দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন আর্থিক সেবা নিয়ে আসবে। ভেঞ্চারসুক, অ্যাঙ্কারলেস বাংলাদেশ, ওসাইরিস গ্রুপ, সাউথ এশিয়া টেক, এবং ওপেনস্পেস ভেঞ্চারস এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পাঠাওকে সহায়তা করবে। পাঠাওয়ের এই অগ্রগতি বাংলাদেশের প্রযুক্তি এবং অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।