EMail: corporatenews100@gmail.com
লোডশেডিং সমস্যার সমাধান কোথায় ?
জনজীবনে চরম ভোগান্তি
করপোরেট নিউজ : দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ, যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে এই লোডশেডিং বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গ্যাস সংকট এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।
ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), জানিয়েছে যে তারা প্রয়োজনীয় চাহিদার মাত্র অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে। এ কারণে ঢাকা শহরেও লোডশেডিং বেড়েছে।
এই বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে। পাশাপাশি সেচ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত সরকার জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে, যা বিদ্যুৎ খাতে বড় ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দামও বেড়েছে। তিন বছর ধরে গ্রীষ্মকালে জনগণকে লোডশেডিংয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, এবং নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুতের দৈনিক গড় লোডশেডিং প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি পৌঁছেছে। গত সোমবার বিকেল ৩টায় দেশে প্রায় ১,৮৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। জ্বালানি সংকটের কারণে প্রায় ৬ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে। এছাড়া, গ্যাস সরবরাহ কমে দৈনিক ৮৮ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে, যা এপ্রিলে ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট।
বিদ্যুৎ সংকটের আরেকটি কারণ হলো, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে। ত্রিপুরা থেকে আসা বিদ্যুৎ প্রায় ১৬০ মেগাওয়াট থেকে ৬০-৯০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে, এবং ভেড়ামারা দিয়ে আসা বিদ্যুৎও কমে গেছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম আসছে, যা সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, সামিটের মালিকানাধীন এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকার কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট কম হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহও কমেছে, কারণ বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৫০ কোটি ডলার বাকি আছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বকেয়া পরিশোধের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এবং শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কনি,জয়নাল,মেহেরাব