Company News 24
Stay Ahead with the Latest in Business

বিলাসী পণ্য আমদানিতে লাগবে শতভাগ মার্জিন

0

ডলার সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪টি বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার( ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪)  ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনাকে স্থিতিশীল রাখতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিলাসী এবং অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত আমদানি বিকল্প পণ্যগুলোর আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।

যে ১৪টি পণ্যে শতভাগ নগদ মার্জিন লাগবে তার মধ্যে রয়েছে মোটরকার, ইলেকট্রনিক্স হোম ও অফিস অ্যাপ্লায়েন্স, সোনা ও সোনার অলঙ্কার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী, ফল ও ফুল, অ-শস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পানীয়, চকলেট, বিস্কুট, জুস, কফি, সফট ড্রিংকস, অ্যালকোহলিক পানীয় এবং তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্য। নির্ধারিত এই ১৪টি পণ্যের বাইরে অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাংক এবং গ্রাহকের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিন নির্ধারিত হবে।

 

বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন দেওয়া মানে কী

বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন দেওয়ার অর্থ হলো, আমদানির জন্য যে ঋণপত্র (Letter of Credit – LC) খোলা হয়, তার বিপরীতে আমদানিকারককে পুরো অর্থ নগদ জমা রাখতে হবে। সাধারণত, যখন কোনো পণ্য আমদানি করা হয়, তখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আমদানিকারক সেই পণ্য আমদানি করেন। এই ঋণের একটি অংশ নগদ হিসেবে জমা দিতে হয়, যা মার্জিন হিসেবে পরিচিত।

যদি কোনো পণ্যের জন্য ১০০% নগদ মার্জিন দেওয়া হয়, তাহলে আমদানিকারককে পুরো মূল্য নগদে দিতে হবে, এবং ব্যাংক কোনো ঋণ প্রদান করবে না। অর্থাৎ, ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ছাড়া পুরো টাকাটাই আগেভাগে পরিশোধ করতে হবে।

এই নিয়মটি সাধারণত তখনই আরোপ করা হয়, যখন কোনো দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম থাকে এবং সরকার বিলাসী পণ্যের আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণ করতে চায়।

 

বাংলাদেশে কী কী বিলাসী পণ্য আমদানি হয়?

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের বিলাসী পণ্য আমদানি করা হয়। এসব পণ্য সাধারণত উচ্চমূল্যের এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় নয়। কিছু প্রধান বিলাসী পণ্য যা বাংলাদেশে আমদানি করা হয়, তা হলো:

১. মোটরগাড়ি: বিলাসবহুল গাড়ি, যেমন: প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের গাড়ি ও স্পোর্টস কার।

২. ইলেকট্রনিক্স: দামি ইলেকট্রনিক পণ্য যেমন স্মার্টফোন, টিভি, ফ্রিজ, এসি, এবং অন্যান্য ঘরোয়া ও অফিস অ্যাপ্লায়েন্স।

৩. সোনা ও স্বর্ণালংকার: সোনা ও এর তৈরি অলংকার, মূল্যবান ধাতু, এবং মুক্তা।

৪. আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা সামগ্রী: বিলাসবহুল আসবাবপত্র এবং ঘর সাজানোর সামগ্রী।

৫. প্রসাধনী: আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ও সৌন্দর্য সামগ্রী।

৬. ফল ও ফুল: বিশেষত বিদেশি ও উচ্চমূল্যের ফল এবং ফুল।

৭. প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পানীয়: উচ্চমূল্যের চকলেট, বিস্কুট, জুস, কফি, সফট ড্রিংকস, এবং টিনজাত (ক্যান) খাদ্য।

৮. অ্যালকোহলিক পানীয়: বিলাসী ধরনের ওয়াইন, হুইস্কি, এবং অন্যান্য অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়।

৯. তামাকজাত পণ্য: বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্য।

১০. গৃহস্থালি ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের উচ্চমূল্যের পণ্য: যেমন দামি পারফিউম, ব্র্যান্ডেড পোশাক, এবং লাক্সারি ওয়াচ।

এই ধরনের পণ্যগুলিকে বিলাসী হিসেবে ধরা হয়, কারণ এগুলো সাধারণত উচ্চমূল্যের এবং প্রচলিত প্রয়োজনের বাইরে। এসব পণ্য আমদানি কমানোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

google-site-verification=1ANNK1RMHaj1Iw7yR8eRAr3R5K-aLbxTqN87o-pnte8 google-site-verification: google05340dd170c353ef.html